Header Ads

মীর সাহেবের সরাই ❑ সেলিম ইসলাম খান ❑ ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব_১৬

 


মী সাহেবেরা

সেলিম ইসলাম খান

উপন্যাস

ধারাবাহিক পর্ব_১৬

সুলতানজাদা নসরত শাহ ও সেনাপতি হৈতেন খান দ্রত ঘোড়া ছুটিয়ে সন্ধ্যার আগেই জোয়ারগন্জের কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন। জোয়ারগন্জ থেকে আট মাইল দক্ষিণে ফকির হাট সরাই খানা। সরাই খানায় মাগরিবের নামাজ পড়ে তারা আবারও ঘোড়ায় উঠলেন। পথে সীতাকুণ্ডে জোহর নামাজ ও মধ্যাহ্ন ভোজনের নিমিত্তে দুঘন্টা যাত্রা বিরতি দিয়েছিলেন।

ইশার ওয়াক্তে সুলতানজাদা জোয়ারগন্জ পৌঁছলেন। ছুটিখান ও জাফর খান পদাতিক সেনাূলের সাথে রয়েছেন বলে তারা আজ আর আসতে পারবেন না। তবে কুমিরা ও সীতাকুন্ডে বিপুল সংখ্যক গরুগাড়ি পাওয়া যাওয়ায় সেনাদের পায়ে হাঁটা থেকে রেহাই হয়েছে। তথাপি পরদিন দুপুরের আগে জোয়ারগন্জ পৌঁছানো নিতান্তই অসম্ভব।

সুলতানজাদা নসরতশাহ পরাগল খানের সকাশে পৌঁছলে তিনি দূতকে দরবারে তলব করলেন। মেহেরকুলের শাসক দাউদ খানের সেনাদের খোঁজখবর জানতে চাইলেন।

দূত বললেন, হঠাৎ আক্রমণে সেনারা শুরুতে একটু ঘাবড়ে গেলেও তারা ত্রিপুরার বিশাল বাহিনীকে ঠেকিয়ে দিয়েছে।

সুলতানজাদা বললেন, শুধু ঠেকিয়ে দিলে চলবে না, ধন্যমানিক্যকে ত্রিপুরা পর্যন্ত ধাওয়া করে নিয়ে যেতে হবে।

দূত বললেন, মহামান্য ছোট সুলতান! আমরা তাদের আগরতলার দিকে ধাওয়া করেছি। আমাদের সাথে পেরে না উঠে তারা খন্ডলের দিকে রওয়ানা হয়েছে। সে খবরটা দেয়ার জন্য আমি আপনার সকাশে ছুটে এসেছি।

সুলতানজাদা বললেন, দাউদ খান তার যথাযোগ্য কাজ করেছেন, এজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখন আমরা শিগগির খন্ডলের দিকে সেনা অভিযান চালাব। তার আগে তাদের গতিবিধির খবরাখবর আরো নেয়া দরকার।

দূত বললেন, মহামান্য সুলতানজাদা যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমি এই দায়িত্ব পালন করতে চাই, কারণ আমি মেহেরকুল থেকে আগরতলা, উদয়পুর থেকে খন্ডল সবই আমার চেনাজানা এলাকা।

নসরতশাহ বললেন, ঠিক আছে আপনাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হল। আপনার সাথে আমার গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আলী আকবরও যাবে, সে আপনাকে সকল প্রকার সহযোগিতা দেবে। আপনি দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করে আমার কাছে পাঠাবেন।পরদিন জোহরের ওয়াক্তে ছুটিখান ও জাফর খান তাদের বাহিনী নিয়ে জোয়ারগন্জ পৌঁছে গেলেন। নামাজ ও মধ্যাহ্নের খাওয়ার শেষে সেনাদের বিশ্রামে পাঠানো হক। বাদ আসর সেনারা মাঠে জমায়েত হলে নসরতশাহ তাদের ভালমন্দ খোঁজ খবর নিলেন। তারপর খন্ডল অভিমুখে রণে লড়তে রাজি কিনা জানতে চাইলেন। সেনারা একবাক্যে চিৎকার করে সম্মতি জানাল। নসরতশাহ শাবাশ বলে তাদের উৎসাহ দিলেন। তারপর বললেন, তাহলে কবে নাগাদ তোমরা যাত্রা শুরু করতে চাও?

সেনাপ্রধান হৈতেনখান বললেন, আগামীকালই আমরা রওয়ানা দিতে চাই মহামান্য।

নসরতশাহ বললেন, সেনারা কি বল?

সেনারা সমস্বরে বলল, সেনাপতির মতই আৃাদের মত মহামান্য। আমরা আপনার আদেশের অপেক্ষায়।

সুলতানজাদা নসরতশাহ বললেন, ঠিক আছে তাহলে সকালেই আমরা রওয়ানা দেব। এখন থেকে তোমরা পূর্ণ বিশ্রামে থেকে শক্তি সঞ্চয় করে নাও।

সবাই সমস্বরে সমতি জ্ঞাপন করল।

 

চলবে........

No comments

Powered by Blogger.