Header Ads

সিঙ্গাপুরে যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬-তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন


১৫ আগস্ট সিঙ্গাপুর-এ শোক এবং ভাবগাম্ভীর্যময় পরিবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬-তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়। এ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


উক্ত অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির সদস্যগণ, বাংলাদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দূতাবাস প্রাঙ্গণকে শোক দিবসের বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানার দিয়ে সজ্জিত করা হয়। ১৫ আগস্ট দিনের পূর্বাহ্নে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মান্যবর হাই কমিশনার  কর্তৃক আগত অতিথিবৃন্দ এবং কর্মকর্তা/কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিত করা হয়।


দূতাবাসে সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মান্যবর হাই কমিশনানের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বাংলাদেশীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর কালরাত্রিতে শাহাদত বরণকারী সকল শহিদদের পুণ্য, পবিত্র স্মৃতি স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে পবিত্র কোর’আন তেলাওয়াতের পর শোক দিবস উপলক্ষ্যে প্রদত্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শুনানো হয়। তারপর দর্শক শ্রোতাদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর, আগত দূতাবাসে কর্মকর্তাগণ এবং অতিথিদের অংশগ্রহণে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শোক দিবসের বিশেষ আয়োজন ছিল বাংলাদেশ থেকে স্বনামধন্য গবেষক ও বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ আব্দুল মান্নান-এর সরাসরি প্রচারিত বক্তব্য পর্ব।


তাঁর বক্তব্যের পর বাংলাদেশীদের মধ্য থেকে উৎসাহী অংশগ্রহণকারীগণ আলোচনা অব্যাহত রাখেন এবং শোকদিবসের ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্টের সকল শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে কবিতা পরিবেশন করেন। আলোচনা পর্বে আগত অতিথিবৃন্দ, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল জাগরণে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। আগত বাংলাদেশীগণ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” রূপায়ণে তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন। শোক দিবসের বক্তব্যে মান্যবর হাই কমিশনার মহোদয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি ১৫ আগস্টে শাহাদতবরণকারী তাঁর পরিবারবর্গ-সহ বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং সকলের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাঙ্গালীর স্বাধীনতার হাজার বছরের লালিত চিন্তাকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা অবিনশ্বর। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনী চক্র তাঁকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু তাঁকে ইতিহাস বা মানুষের হৃদয় কোন জায়গা থেকেই মুছে ফেলা যায়নি।  বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তাঁরই রক্ত ও চেতনার উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক দর্শন থেকে উৎসারিত জাতিসংঘের ‘People’s Empowerment and Development’ রেজোলিউশন গৃহীত হয়েছে যা বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে।  বঙ্গবন্ধুর চেতনার মাহাত্ম্যকে লালন করে , তাঁর আদর্শকে উচ্চকিত রেখে প্রত্যেক বাংলাদেশী নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ, দেশের মানুষ ও মানবকল্যাণে কাজ করে যাবেন তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  শোক দিবসে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ও রূহের মাগফেরাত প্রার্থনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করে দিনব্যাপী খতমে কোরানের আয়োজন করা হয় এবং কোরান খতম শেষ করে বিশেষ দোয়া এবং মোনাজাত করা হয়। অপরাহ্নের শেষ অবধি স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা অনুষ্ঠান অব্যাহত থাকে যাতে উৎসাহী প্রবাসী বাংলাদেশীগণ অংশগ্রহণ করেন। আগত অতিথিদের অনেকে শিশু-কিশোর-সহ দূতাবাসের ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো প্রদর্শনী দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সহ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রেরিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এবং তাঁর জীবন ও কর্মের উপর বিরচিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

তথ্যসূত্রঃ বাংলার কণ্ঠ সিঙ্গাপুর 

No comments

Powered by Blogger.