Header Ads

প্রতিদান ❑ মোঃ রাশেদুল হাসান রাজু


প্রতিদান

মোঃ রাশেদুল হাসান রাজু

আজ অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো। দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস কখনই ছিলনা সুমনের। কিন্তু প্রায় একমাস যাবত পরীক্ষা, রাতজাগা, টিউশনি সবমিলিয়ে অনেক ধকল গেছে শরীর ও মনের উপর দিয়ে। তাই শাওয়ার নেওয়ার পর ওর মনে হচ্ছিল শরীরটা ঘন্টা দুই এর জন্য এলিয়ে দিবে বিছানায়। এমন সময় ওর মোবাইল বেজে উঠলো। কল এসেছে ওর বান্ধবী তনিমার মোবাইল থেকে। তাই রিসিভ করতেই হবে।
কারন অরিয়েনটেশ ক্লাস থেকে ওর সাথে তনিমার বন্ধুত্ব। একসাথে নোট করা, বিপদে, অসুখে, ক্ষুধায়, অর্থকষ্টে সব সময় পাশে থেকেছে তনিমা। এক কথায় ওর চেয়ে আপন ভার্সিটিতে আর কেউ নেই সুমনের।
মোবাইল রিসিভ করল সুমন।
তনিমাঃ রিসিভ করতে দেরি করলি যে? কি করছিলি?
সুমনঃ Attempt to lay on my বিছানা ।
তনিমাঃ এখোনি টিএসসিতে আয়।
সুমনঃ এক্ষুনি!
তনিমাঃ এক্ষুনি মানে just now. I have something special to say you.
সুমন রওনা হয়। ভাবতে থাকে কি এমন special কথা এতো দিন পর! দুত্তোরি কি মনে আসছে যা তা!
টিএসসিতে পৌঁছে দেখে তনিমা বসে আছে।
সুমনঃ কেনো ডেকেছিস urgently? বল।
তনিমা ব্যাগ থেকে পায়েশ, লুচি আর মাম বের করে বললো আগে খেয়ে নে। তারপর বলছি। কিছু খাওয়া হয়নি তোর বুঝতে পারছি।ডাইনিং এ কিছু পাসনি।
সুমন খাওয়া শেষ করে জানতে চাইল আবার কি কথা।
তনিমাঃ আমি একজনকে খুব ভালবাসি।
সুমন লাজুক ভাবে জানতে চাইল
সুমনঃ কে সে!
তনিমাঃ তার নাম রায়হান। সে রংপুর একটা কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার। আমাদের ইউনিভার্সিটি
থেকে পাস করেছে। বিসিএস ভাইভা দিয়েছে। হয়ে যাবে। ক্লাস নাইন থেকে আমাদের সম্পর্ক।কিন্তু ওর দাদু আমাদের বাড়িতে এক সময় কাজ করতো।ওরা গরীব। বলতে পারিস আমার টাকা দিয়েই আমি ওকে এ পর্যন্ত এনেছি। আমার ভাই কোনদিন এ সম্পর্ক মেনে নিবে না। তুইতো জানিস এদিকে রতন আমাকে খুব disturb করে। আমাদের ও রতনের পরিবারও চায় আমার সাথে রতনের বিয়ে হোক। সে জন্য decision নিয়েছি আমি আর রায়হান কোর্ট ম্যারেজ করবো। আজ নাইট কোচে তুই আমার সাথে যাবি রংপুর। আগামী কালই বিয়ে করবো। তোর কথা সব জানে রায়হান।
মুহূর্তে পুরো পৃথিবী উল্টে গেল সুমনের কাছে। এরকম কিছু শোনার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। তাই নির্বাক হয়ে গেলো সে।
তনিমাঃ কি ভাবছিস? আমি নিরুপায়। I badly need your help. I have none to support me without you. Please, Sumon. If I did anything for you, give me return today by being with me.(crying)
স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে সুমন বলে....
সুমনঃ Don't worry, my friend. I will do everything for you. I will sacrifice all for your happiness but I want to suggest you at first.
তনিমাঃ কি suggestion দিবি?I have no alternative.
সুমনঃ তোর ভাই যেহেতু মেনে নিবেন না কোনদিন
so you can't go to your brother anytime and you have already lost your parents. তাই বলছি তুই এক সপ্তাহের জন্য বাড়ি যা। ফিরে আসার পর আমি তোকে রংপুর নিয়ে যাবো। ভাই, ভাবি, ভাতিঝিদের শেষ দেখাটা দেখে আয়। I do all that you want. I promise.
তনিমার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ।এ ঝিলিক যেন অলিম্পিক স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আতশবাজির ঝিলিক।
তনিমাঃ আজ রাতেই বাড়ি যাবো তাহলে। তুই নিজের খেয়াল রাখিস। ঔষধগুলো ঠিক মতো খাবি। গোসল, খাওয়া সময়মতো করবি। এখন তাহলে রুমে গিয়ে rest কর। মোবাইল এ কথা হবে, my dear.
সুমন রুমে গিয়ে pressure এর ঔষধ না খেয়ে ২ টা sleeping pill খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। রাত ৩ টা ।বেজে চলেছে মোবাইলের রিং টোন। হাতরে মোবাইলটা ধরে রিসিভ করে সুমন। অপরিচিত এক ব্যাক্তির ল্যান্ড ফোন।
Hello, are you Mr. Sumon?
Yeah. But you??
I am sub inspector of Narsindhi police station.
What happened sir!
আপনি তনিমার বন্ধু, right. সে আপনাকে আসতে request করেছে। আমরা অবশ্য ওনার guardian দের আসতে বলেছি। বাকিটা থানায় এসে জানবেন।
সুমন সকাল সাড়ে আটায় থানায় পৌঁছে। সরাসরি তনিমার কথা জিজ্ঞাসা করে। তনিমাকে রাখা হয়েছে লকআপে। সে অঝোরে কাঁদছে। কি হয়েছে তনিমা? উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্ন করে সুমন। তাতে সে জানতে পারে রাতে বাসের মধ্যে রতনের সিটে আপত্তিকর অবস্থায় তনিমাকে দেখে রতন ও তনিমাকে পুলিশে দিয়েছে বাস ড্রাইভার। উভয়ের পরিবার পঞ্চাশ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে দুজনকে নিয়ে গিয়ে আজ বিকালেই বিয়ে পড়াবে।
সুমনঃ রায়হান ভাই কে জানিয়েছিস বিষয়টা?উনি কি বলেছেন?
তনিমাঃ বলেছে, সে আসতে পারবে না। আরো বলেছে he doesn't want to marry a prostitute like me. শুধু তুই বিশ্বাস কর আমি কিছু জানিনা ।কোথা থেকে কি হয়ে গেলো!?
সুমনঃপৃথিবী উল্টে গেলেও আমি বিশ্বাস করিনা ।তুই এ বিয়েতে রাজি হোসনা। It's a clear conspiracy.
তারপর তনিমা ও রতনকে ওদের অভিভাবক নিয়ে গেল। তনিমার অনুরোধে বিয়েতে সুমনও গেলো। বিয়ে পড়ানো হবে এমন সময় প্রচন্ড চিৎকার। তনিমা ফলকাটার চাকু দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। senseless অবস্থায় তনিমাকে নিয়ে ওর ভাবি ও সুমন হাসপালে ছুটলো এম্বুলেন্সে। Rab এর লোকজন এসে রতন ও তনিমার ভাইকে নিয়ে গেছে।
হাসপাতাল পৌঁছে ডাক্তার তনিমাকে OT তে রেখে বেরিয়ে এসে জানালো চাকু ভুরি touch করেনি। তবে প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। জরুরী রক্তের প্রয়োজন। A positive.
সুমনঃ আমি রক্তদিব। আমার blood group A positive. এই দেখুন আমার ID card. সন্ধানীতে আমরা রক্ত দিয়েছি। আমার কোন অসুখ নেই। রোগী বাচাঁন। Test করে সময় নষ্ট করবেন না, please, doctor.
৩ ঘন্টা পর তনিমার ভাই এসে জানালো রতন বাসের হেলপারের সাহায্যে পানির বোতলে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে তনিমাকে ব্লাকমেইল করেছে যা সে RABএর কাছে স্বীকার করেছে। তনিমার ভাবিকে জানিয়েই উনি ঢুকলেন ডাক্তার এর রুমে।
কি অবস্থা, doctor?
আমরা সাথে সাথে এক ব্যাগ রক্ত পেয়েছি । আরো এক ব্যাগ কিনে নিয়েছি যেটা চলছে। Your sister is almost out of danger now.
ওর বন্ধু, সুমন কোথায়?
ওহ, উনি High blood pressure এর patient যা আমাদের কাছে গোপন করে আপনার বোনকে বাঁচাতে blood donate করেছেন। সাথে প্রচুর পরিশ্রম ও মানসিক আঘাতে স্ট্রোক করেছেন। এখন ICU তে আছেন।
Nurse, ICU এর patient এর কি অবস্থা?
Nurseঃ Sorry sir, Mr. Sumon is no more.

No comments

Powered by Blogger.