মীর সাহেবের সরাই ❑ সেলিম ইসলাম খান ❑ ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব_০৫
মীর সাহেবের সরাই
সেলিম ইসলাম খান
❑
উপন্যাস
দুদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সেনা
সংগ্রহ করে তাদের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দিলেন সুলতানপুত্র নসরত শাহ। তারপর একশ
সৈন্যের কমান্ডার নিযুক্ত করলেন ছুটি খানকে বাকি একশোর কমন্ডার হৈতেন খান।
সীতাকুন্ড ও কুমিরার সেনারা ছুটি খান আর চিতাগাং সেনারা হৈতেন খানের বাহিনীতে যোগ
দেবে। পুরো সেনাদলের প্রধান হিসেবে নির্দেশনা দেবেন সুলতানজাদা নসরত শাহ। উপদেষ্টা
হিসেবে সঙ্গে থাকবেন সালতানাতের সচিব হামিদ খান।
প্রস্তুতি শেষ হলে সেনাদলকে
বিদায় জানালেন রাজ্য শাসক পরাগল খান। কুড়ি বছর আগে সোনারগাঁর সুলতান শামসুদ্দিন
ইলিয়াস শাহ নির্মিত উঁচু মহাসড়ক ধরে জোয়ারগন্জ থেকে ঘোড়া আর হাতির পিঠে রওয়ানা হল
সেনাদল। সবার আগে ছুটি খানের সেনারা। তারপর হৈতেন খানের সেনারা। সবশেষে সুলতানজাদা
নসরতশাহ ও উজির হামিদ খান ঘোড়ার গাড়িতে রওয়ানা হলেন। কুমিরা পৌঁছে তারা রাত্রি
যাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন। কুমিরার শাসক জাফর খান তাদের সাদর সম্ভাষণ জানালেন।পরদিন
কুমিরার দুইশো সেনাসহ নসরতশাহের সেনাদল চিতাগাং অভিমুখে রওয়ানা হল।
হার্মাদ দলনেতা শাচীন মংডু থেকে
এসে দুমাস আগে চিতাগাং বন্দর দখল করে নিয়েছে। বন্দরের দুটি আরবী জাহাজ তাদের
কব্জায় রয়েছে। সেই সাথে জেলে নৌকায় হামলা করে তারা প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
উপকূলীয় এলাকায় হামলা করে প্রতিদিন লুট করছে। জোয়ান ছেলেমেয়েদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে
রেঙ্গুনের দাস বাজারে বিক্রি করবে বলে। সেনই সাথে সন্দ্বীপের হার্মাদ সর্দার
অমাচিংএর সাথে মাঝ সমুদ্রের বিদেশি জাহাজ লুন্ঠন অব্যাহত রেখেছে সে।নসরত শাহের
সেনাদলের আগমনের খবর পেয়ে অমাচিংএর নিকট থেকে পাঁচশ সেনা চেয়ে খবর পাঠিয়েছে শাচিন।
তার বাহিনী নিমতলীতে এসে অবস্থান নিয়েছে।
ইশার ওয়াক্তে নসরতশাহের বাহিনী
চিতাগাং এসে পৌঁছল। পাহাড়তলী সরাইপাড়ায় এসে চিতাগাঙের শাসক আব্দুল হালিম খানের
আতিথ্য গ্রহণ করলেন তারা। ইশার নামাজবাদ রাতের খাবার সারতে সারতে রণপরিকল্পনা নিয়ে
আলোচনা শুরু করলেন সেনানায়ক নসরত শাহ।তিনি সম্মুখ সারিতে ছুটিখানের দলকে দায়িত্ব
দিলেন। তাদেরকে আবার দুইভাগে ভাগ করলেন। একভাগকে তীরন্দাজ গেরিলা হিসেবে দায়িত্ব
বুঝিয়ে দিলেন। তাদের নেতৃত্বের ভার পড়ল হালিম খানের ভাই আলিম খানের উপর। সম্মুখ
সারির তীরন্দাজ ছাড়াও তাদের দুইদলকে দুই পাহাড়ে মোতায়েনের হুকুম দিলেন। যাতে তারা
গাছের আড়াল নিয়ে যথাসম্ভব মগদস্যুদের ঘায়েল করতে পারে।
তীরন্দাজ দলের পর ছুটিখানের
নেতৃত্বে বর্শা ও বল্লম বাহিনী, তাদের পেছনে হৈতেন খানের নেতৃত্বে ঘোড় সোয়ারী
তলোয়ার বাহিনী।
চলবে........
No comments