মীর সাহেবের সরাই ❑ সেলিম ইসলাম খান ❑ ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব_০৬
মীর সাহেবের সরাই
সেলিম ইসলাম খান
❑
উপন্যাস
মালাবার বন্দরে পর্তুগিজ নাবিক
ভাস্কো দা গামার আক্রমণের পরদিন সৈয়দ আলফা হোসাইনীর জাহাজ মালাবারে পৌঁছে। পৌঁছেই
আক্রমণ শুরু করে জাহাজ পনেরোটি আধ ঘণ্টার মধ্যে ভাস্কোর পাঁচটি জাহাজনাবিকসহ ক্রোক
করে আলফা হোসাইনী ও ইউনিস। ভাস্কোদা গামাকেও বন্দী করা হয়। তাকে বিচারের মুখোমুখি
করার ব্যবস্থা করেন রাজা জামোরিন।
রাজা জামোরিনের কন্যা জেনেলিয়া ও
জামাতা কামাল বিজয়ী দুই আরব বণিকের সম্মানে রাজাপ্রাসাদে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন
করেন।কিন্তু বিকেল না হতেই মালাবার বন্দরে বামুনরা ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করে। তারা
রাজা জামোরিনের পদত্যাগ ও ভাস্কো দা গামার মুক্তি দাবি করে। তারা রাজা জামোরিনকে
আরব বণিকদের হাতের পুতুল বলে প্রচার চালাতে লাগল।
রাজা জামোরিনের সেনাবাহিনীর
অধিকাংশ সেনাই মোপলা মানে আরব বংশোদ্ভুত।বামুনরা সন্ধ্যে হতে না হতে মোপলা সেনাদের
উপর আক্রমণ শুরু করল। মোপলা সেনারা প্রতি আক্রমণে না গিয়ে ব্যারাকে ফিরে এল।
বামুনরা ব্যারাকে হামলা চালাল। বামুন দলের ধর্মগুরু শিবরাম বাবু রাজপ্রাসাদের
সামনে বিশাল প্রতিবাদী সভা ডাকলেন। তারা এক দফা এক দাবি নিয়ে শ্লোগান দিতে লাগলেন।
এমন সময় রাজবাড়ির শাহী এলান
ঘোষণা হল, ভাস্কো দা গামা মালাবার দখল করতে এসে ধর্মগুরু শিবরামের সহযোগিতা
পেয়েছেন। এদের প্রতিহত করা নাগরিক কর্তব্য।
রাজ এলান পাওয়া মাত্র মালাবারের
রাস্তায় যেন জনস্রোত নামল। মুহূর্তের মধ্যে মালাবারের প্রতিটি ঘর থেকে বেরিয়ে এল
হাজার হাজার মানুষ। কারো হাতে লাঠি, কারো হাতে দা খুন্তি, কারো হাতে কুঠার।
মহিলারাও নেমে এসেছে ঝাড়ু আর জুতা হাতে। শিশুরা এসেছে গুলতি হাতে।
জনতার দাবড়ানি খেয়ে বামুনরা
দিগ্বিদিক ছুটে পালাতে লাগল।
চলবে........
No comments