প্রথম প্রেম ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৫
প্রথম প্রেম
সাবরিনা মোয়াজ্জেম
একটা চুমুর জন্যে এতো অভিমান শুধু
তা ই সারাক্ষণ ভাবছিলাম। আজ চারদিন ধরে মহারাণীর দেখা নেই! ঘুমাতে পারছিনা,খেতে পারছিনা,
পড়তে পারছিনা ওকে এক নজর দেখার জন্যে মন বড্ড ব্যাকুল হয়ে আছে! জানালায় নেই, বাসায়
আসেনা,ছাদে উঠেনা স্কুলে যায়না! পথে রাস্তায় কোথাও নেই! আর পারছিনা! লাজ লজ্জার মাথা
খেয়ে বনলতার বাসায় গেলাম। খালাম্মা, কেমন আছেন? বসো বসো বাবা! এদিক সেদিক তাকাচ্ছি
কিন্তু ও কোথায়? লজ্জায় জিজ্ঞেস করতেও পারছিনা, সাহসে কুলাচ্ছেনা! ভগ্ন হৃদয়ে ফিরে
এলাম!
এই প্রথম আমার পড়া আকাশে উঠলো, খাওয়া
ঘুম হারাম হয়ে গেলো! মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে গেলো, তিন দিন স্কুল কামাই দিলাম! কম খেতে
খেতে অবস্থা সংক্টাপন্ন! বাবা মা অস্থির আমার কি হয়েছে? ডাক্তার বৈদ্য রোগ কি আর ধরতে
পারে! আমার এমন অবস্থার কথা কানাকানি হতে হতে ওর কানেও গেলো! আমি ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ ঘুমের
মাঝে টপ টপ জল আমার মুখে! দেখি বনলতা আমার পাশে বসে কাঁদছে! যার চোখের পানিতে আমার
কপাল ভেজা!
আমি টুপ করে ওকে জড়িয়ে ওর কপালে চুমু
খেলাম। চুমু খেয়ে জ্ঞান হারালাম! আমাকে যখন আবিস্কার করি তখন আমার মাথা ওর কোলে হাসপাতালের
বেডে! কারণ গত দশদিনে আমি ঘুমহীন আর না খাওয়ার কারণে অনেক অসুস্থ হয়ে যাই! তাই সেন্স
হারিয়ে ফেলেছিলাম!
দু পরিবার ব্যাপারটা বুঝে যায়! কিছু
বাঁধা বিঘ্ন আসে কিন্তু আমাদের রোখে কে! আমরা আবার পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলি প্রেমের
প্লাবনে! দেখতে দেখতে আমি ইন্টারইমিডিয়েট পাশ করে জয়েন্ট করি কমিশন অফিসার হিসেবে সেনাবাহিনীতে।আর
ও তখন ক্লাস টেন! ট্রেনিং কালীন সময়ে শুধু প্রতিদিন চিঠি একটা করে চিঠি আসতো, চিঠিতে
কতো অভিমান আর আদর মাখা, কখনো গোলাপের পাপড়ি কখনো মুয়ুর পুচ্ছ! যা আমি আজও জমিয়ে রেখেছি!
আমি জবাব দেবার সময় পেতাম কম কিন্তু এক মাসের উত্তর একটা চিঠিতে দিয়ে দিতাম। আর প্রতিক্ষায়
থাকতাম ওর চিঠি কখন আসবে!
চলবে.........
মডেলঃ আমার মেয়ে, ডাক্তার শাহ ফারাহ।
No comments