প্রথম প্রেম ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৬

প্রথম প্রেম

সাবরিনা মোয়াজ্জেম

পর্ব_০৬

 বনলতা আর আমার মাঝে এই যে চিঠি চালাচালি শুরু হলো পুরো ট্রেনিং শেষ করলাম এই চিঠি চালিয়ে! সারাদিনের পর যে সময় টুকু পেতাম তা ছিলো বনলতাকে ভাবনার একান্ত সুযোগ! আর ভাবতাম কখন যে তাকে কাছে পাবো আর জড়িয়ে ধরে বলবো জীবনের প্রথম আমার মুখ থেকে " বনলতা বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়!" হাজার কথার ভীড়ে শুধু এই কথাটি মুখ দিয়ে কোনদিন উচ্চারণ হয়নি!কাগজে কলমে হয়েছে অনেকবার, সিরিয়াসলি হয়নি! আমার এতো ঘাম জড়ানো কষ্টের মধ্যে বনলতার এক খানা সাদাকালো ছবি আমায় জাগিয়ে তুলতো।আমার ক্লান্ত দিনের অবসান ঘটতো! কখনো পুড়ে যাওয়া খস খসে গোলাপের পাপড়ি মুখে গালে ঘঁষতাম কখনো মুয়ুরপুচ্ছের দিকে রাতের পর রাত তাকিয়ে থাকতাম আর বলতাম, “বনলতা বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়!"

এদিকে বনলতার একটা দিন একটা রাত বছর মনে হতো! বনলতা অনিমেষ দৃষ্টিতে ওর খোলা জানালায় দাঁড়িয়ে ভঘ্ন হৃদয়ে ফিরে আসতো দু চোখে জড়তো অঝোর ধারা! ঈদে ছুটি পেলেও বনলতা রাহাতকে দেখতে পেতনা কারণ বনলতার বাবা ওদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছুটে যেতো ঈদ করতে! তখন রাহাত আর বনলতার জন্যে বড্ড বেশী কঠিন সময় যেতো! কারণ এতো কাছে এসেও বনলতার দেখা পেতোনা!

রাহাত বলে,তাই আমি ছুটি পেলেও বাসায় যাবার কোনো আগ্রহ পেতাম না। শুধু মন পরে থাকতো বনলতার মাঝে! এই ভাবে কষ্টে সৃষ্টে ট্রেনিং কালীন সময় শেষ হয় আমার! তারপর ছুটে আসি বাসায়। আবার আমরা ছাদের আশ্রয় নেই! ছাদে গিয়ে খুব আড়ালে বনলতাকে বুকে জড়িয়ে ধরি কিন্তু দেখি খুব আড়ষ্ট! দূর্নিবার লজ্জা তাকে ঘীরে রেখেছে! চোখে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে!

বনলতাকে স্বাভাবিক করতে আমার বেশ সময় লেগে যায়! এককালের ডানপিটে মেয়ে আজ লজ্জায় মোড়ানো নারী! যখন চোখাচোখি হলো তখন বুকের কোণ ভেঙ্গে ঝড় উঠলো কান্নার! আমি যতোবার বুঝাতে চেয়েছি, আমি এখন তোমার পাশে সে ততো কেঁদেই যাচ্ছে! এক সময় কান্না থামলো! বলি, কাঁদছিলে কেনো? মনে হতো,তোমাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম! আমি যেনো এখন স্বপ্ন দেখছি! বলো আমায় ছেড়ে কোথাও যাবেনা? আরে পাগলি, এখন তো চাকুরী করতে হবে ঠিক ভাবে, নয়তো তোমায় ঘরে তুলবো কোন মুখে? আমি জানিনা! লক্ষি আমার, এখন চাকুরীর ফাঁকে ফাঁকে তোমায় দ্রুত দেখতে চলে আসবো বলে ই বুকের আরও কাছে দুটি নর নারী! এযে প্রেম নয়, এযে জোয়ার ভাটার খেলা! জোয়ারে ঢেউয়ে ঢেউয়ে কাছে আসা আবার ভাটায় দূরে চলে যাওয়া!

চলবে.........

মডেলঃ আমার মেয়ে, ডাক্তার শাহ ফারাহ।

চলবে.........

মডেলঃ আমার মেয়ে, ডাক্তার শাহ ফারাহ।