প্রথম প্রেম ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৪
সাবরিনা মোয়াজ্জেম
সেই বৃষ্টি মুখর ক্ষণ টুকু ই
আমাদের দুজনের প্রথম কাছে আসা! আমরা তুমুল ঝড়ের মধ্যেও পাখির পালকের মতো একে
অন্যকে আটকে রেখেছি! কেউ কিছুতেই আমাদের আটকে রাখতে পারিনি,দমাতে পারিনি! বরং নতুন
উদ্যোমে প্রেম ডাল পালা ছড়িয়েছে, ডানা গজিয়েছে, দূর থেকে কাছে এনেছে! আমাদের প্রেম
কখনো নিভু নিভু হয়নি! তারপর প্রতিক্ষণ তার পথ চেয়ে আমি রই, কখনো সেও আমার পথ চেয়ে
থাকে! ছুটির দিন গুলো বেশ মজার কাটতো!
দুজন সবাইকে ফাঁকি দিয়ে সাইকেল চালিয়ে
দূরে বহুদূর চলে যেতাম। ও বসতো সাইকেলের রডে আর আমি সিটে! পুরো কোয়ার্টার আমাদের প্রেমময়
কাহিনীর সুভাসে মৌ মৌ করতো! মাঝে মাঝে ওকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে আসতাম। মুরব্বিরা বলতেন,
আমরা নাকি বখাটেপনা করছি! আর আমি নির্ঘাত বখে গেছি! তারপর থেকে ও আমার সাইকেলে চড়তোনা।
ওর বাবাকে বলে, একটা সাইকেল কিনে আমার কাছ থেকে শিখে আমরা পাল্লা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে
দূরে চলে গিয়ে নিরাপদ স্থানে বসে প্রেমালাপ করতাম!
ভয় ছিলো শুধু একটা ই আবার না বদলি
হয়ে বদলে যায়! বাবার বড় ছেলে হওয়ার ধরুন বাবা চাইতেন আমি যে কোনো বাহিনীতে কমিশন অফিসার
পদে যোগদান করি তাই বাবা আর বদলি না হবার সিদ্ধান্ত অটল রয়ে যায়! বনলতার বাবাও চাইতেন
তার সন্তানরা ঢাকায় ভালো জায়গায় পড়ুক! এই ভাবে আমাদের প্রেম ঝড় সিডর আইলা, সুনামি বিরুদ্ধে
লড়াই করে ও যখন ক্লাস এইটে আমি তখন ইন্টার প্রথম বর্ষে!
একদিন আমরা সাইকেল চালিয়ে অনেক দূরে
চলে যাই বেড়াতে! আশির দশকের সময় তখন ঢাকার শহর বলতে ওই পুরাণ ঢাকায় ই বুঝাতো! আমরা
বন জংগল ঘেরা এক নিবিড় পরিবেশে দুজন দুজনকে খুব কাছাকাছি আবিষ্কার করি! ইচ্ছেরাতো পাখা
গজিয়ে ডানা মেলে! নর নারী দুজন যদিও আশির দশকের শুরুতে এইট মানে অনেক বড় মেয়ে। বিয়ের
উপযুক্ত তার পরেও আমরা ছিলাম বাঁধাহীন কাপল! চিঠিতে কি আর পেট ভরে? বনলতার ইচ্ছে সে
চোখ বন্ধ করে রাখবে, আমি যেনো তার কপালে চুমু খাই৷ হা জড়ানো মোড়ানো আমরা কিন্তু চুমু
খাওয়ার সাহস ছিলোনা বলে আর চুমু খাওয়া হয়ে উঠেনি তাই বাসায় ফেরার পালা! কিন্তু ও চুমু
না নিয়ে বাসায় ফিরবেনা! অনেক অনুরোধ করেছে,কেদেছে কিন্তু নাহ,আমি অনুরোধ রাখতে পারিনি।
হা বলেছি, অন্যদিন অন্য সময়ে!
চলবে.........
মডেলঃ আমার মেয়ে, ডাক্তার শাহ ফারাহ।
No comments