কেন স্কুল জীবনের বন্ধুরা ভালো বন্ধু হয় !
কেন স্কুল জীবনের বন্ধুরা ভালো বন্ধু হয় !
——————————————————
অনেক দিন থেকে ভাবছি স্কুল জীবন ও স্কুল জীবনে গড়ে ওটা বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু লিখব । আমি জানি আমার লেখার তেমন হাত নেই তবে সত্যি কথা এই যে , যা লিখতে যাচ্ছি তা মন থেকে লিখার তাড়নায় লিখছি ।
লক্ষ কোটি সুখ কখনো কখনো কস্টকে মুক্তি দিতে পারে ,
কিন্তু সমস্যা মাঝে মাঝে হাজার টা সুখ ও হাসিকে মুছে দিতে পারে !
ইহা হচ্ছে জীবনের চলার পথে একটি
অপ্রিয় সত্য ..
কিন্তু সরল বাস্তবতা হচ্ছে আমার মতে
একজন ভাল বন্ধু হও ...সৎ বন্ধু হও “
বন্ধুত্ব কি আর কেন তার ব্যাখ্যা দিতে গেলে ক্ষুদ্র জ্ঞানে কুলোবে না । বন্ধুত্ব কে কোন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায় না । কারণ বন্ধুত্ব একটি বিশাল ব্যাপার । যা কোন যোগ্যতা বা মাপকাটি দিয়ে বিচার করা যায় না । যখন দুই জন মানুষ একে অপরের কাছে ভাব বিনিময় করতে , চলতে , বলতে কমফোর্ট ফিল করবে তখন ই দুটো মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে । জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে পরিচিতি হয় , সবাই কে বন্ধু করে নেয়া যায় না তবে প্রয়োজনের তাগিদে হয়তো বন্ধু মনোভাব নিয়ে সহযোগীতা করা যায় । আবার চলার পথে অনেক বন্ধু হয়ে যায় । বন্ধু মনোভাব থাকলে জীবনে সবাই কে বন্ধু মনে হবে আর নিজেকে একাকীত্বের হাত হতে মুক্তি দেয়া যাবে ।
“ কখন ছুটি হবে , কখন বাজবে সেই ঘন্ঠা “?
একটা মানুষ ক্রমে ক্রমে জীবনের বিভিন্ন পর্যায় পার করে আসে । শৈশব ,কৈশোর , যৌবন , পৌঢ় ও বৃদ্ধ । এই বিভিন্ন সময়ে কত জনের সাথে দেখা হয় , কথা হয় , বিচ্ছেদ হয় তবে যে জিনিসটা দাগ কাটে তা হচ্ছে ছোটবেলার বন্ধুত্ব । ছোটবেলার বন্ধুত্ব টা গড়ে ওটে সাধারণত স্কুল জীবনে । কথায় বলে , স্কুল জীবন শ্রেস্ট জীবন , যদি না হয় এক্সামিনেশন ।
“ বন্ধু তুমি অমূল্য ধন “।
জীবনের সব পর্যায়ে বন্ধুর প্রয়োজন রয়েছে । তবে আজকাল প্রযুক্তির যুগে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা প্রচুর । তার পরে ও স্কুল জীবনের বন্ধুরা জীবনের শ্রেস্ট বন্ধু হয়ে থাকে । যখন আমরা শৈশব ও কৈশরের দিন গুলো অতিবাহিত করি তখন আমাদের মনে কোন চিন্তা ছিল না , একটাই চিন্তা ভালো করে পড়াশোনা করা । পড়াশোনার পাশাপাশি খেলা ধুলা সহ বই পড়া , ব্যায়াম , সাঁতার , ইত্যাদি জড়িত থাকে । যখন শৈশবের স্কুল পাঠশালা পেরিয়ে হাইস্কুলে ভর্তি হই তখন বন্ধুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় । এক দিন স্কুল মিস দিলে মনে হবে বন্ধুদের মিস করা হচ্ছে , স্কুল কে মিস করা হচ্ছে , লস হচ্ছে ঐ দিনের ক্লাসের পড়া গুলো ।
“ দিন গুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না “
কোমলমতি কত গুলো নতুন মুখের সাথে পরিচয় হতে সময় লাগেনা তেমনি বন্ধুত্ব হতে ও দেরী হয় না । এক সাথে উটা বসা , চলা ফেরা , ক্লাসে মনোযোগ দিয়ে স্যারের কথা শোনা , হোম ওয়ার্ক করা , অপারগ হলে বন্ধুর সাহায্য নেয়া , বন্ধু কে সাহায্য করার সুযোগ খোজা ।তখন কি মনে হতো আমি কোন গ্রামের আর বন্ধুরা কোন গ্রামের ? কারণ ছোট্ট বেলার বন্ধুত্বে কোন প্রশ্ন থাকে না । কেননা ঐ বয়স টা নবীন আর সবুজ মনের । তাই বন্ধুত্ব গড়ে ওটে এ টু জি সবার সাথে । কত গল্প , কত পরিকল্পনা , বেড়ানো সব চলে বন্ধুদের সাথে । ঐ সময় কচি মনে কখনো আসে না কে গরীব আর কে ধনী । কে কালো কে ফর্সা ? কে দামী পোষাক পরে আর কে কমদামী ! কোন ভেদাভেদ ছাড়াই একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে ক্লাসের সবার সাথে । ঐ সময় কত সুন্দর সময় পার হয়ে যায় । একটি ক্লাসে শুধু কি মেধাবী আর শান্ত শিস্ট ছেলে মেয়ে থাকে ? না , ক্লাসে অনেক দুস্টের শিরোমনি রা ও থাকে । থাকে পিছিয়ে পড়া কিছু ছেলে মেয়ে । তবে দুস্টের শিরোমনি দের কথা সারা জীবন ই মনে থাকে । যা পরিনত বয়সে একলা একলা মনে হলে হাসি পায় ।
“ বন্ধু বন্ধু বন্ধু রে - তোরা কেমন আছিস বল না রে ?”
বন্ধুত্বের ভীত মজবুত হয় বিশ্বাসে । স্কুল জীবনের বন্ধুরা পারে সারা জীবন বন্ধু হয়ে থাকতে । কারন ঐ সময়ের বন্ধুদের মনে কোন কলুষতা থাকে না । সত্যিকারের বন্ধুত্বে
কোন প্রশ্ন থাকে না । থাকে শুধু দাবী আর অবিরাম ভালবাসা , ভালোলাগা । স্কুল জীবন শেষ হবার সাথে সাথে অনেকের সাথে যোগাযোগ থাকে না । জীবন ও জীবিকার তাগিদে কারো সাথে কারো যোগাযোগ থাকে না ।সব বন্ধু আবার সমান ভাবে প্রতিস্টিত ও হয় না । কারন সবার কপালে শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার সুযোগ না ও আসতে পারে । কারো কারো ভাগ্যের চাকা থেমে যায় পরিবারের টানা পোড়েন । শেষ পর্যন্ত দেখা যায় কেউ হয়তো ডাক্তার , কেউ ইন্জিনীয়ার , কেউ শিক্ষক , প্রশাষনিক কর্মকর্তা , সচিব , মন্ত্রী , থেকে শুরু করে সমাজে সকল পেশায় জড়িত । কর্ম ক্ষেত্রে বা চলার ফাঁকে ফাঁকে এমন কেউ নেই যে স্কুল জীবনের বন্ধুদের কথা মনে পড়বে না । কখনো যদি সেই ছোটবেলার সাথীদের ফিরে পাওয়া যায় মনে হবে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি । কারন স্কুল জীবনের বন্ধুদের কথা কখনো ভোলা যায় না । টাকা পয়সা দিয়ে সব কেনা গেলে ও বন্ধুত্ব কে কেনা যায় না ।
“ হার জিত চিরদিন থাকবে , তবু ও এগিয়ে যেতে হবে ।”
ছোটবেলার বন্ধু যত বড় পদে বা প্রভাবশালী হোক না কেন বন্ধুকে পেলে জড়িয়ে ধরবে , কথা বলবে , মন খুলে শেয়ার করবে নিজের কথা গুলো ।ব্যস্ত জীবনের মাঝে এ যেন পরম পাওয়া । কোন কোন সময় আছে বয়স বাড়লে ও ছোটবেলার সেই বন্ধুত্ব হারিয়ে যায় । তার একমাত্র কারণ , চিন্তা চেতনার পরিবর্তন । যা ছোটবেলায় মাথার মধ্যে ছিল না । কখনো কখনো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের সাথে গড়ে ওটা সম্পর্কে ফাটল ধরে ।তবে ভালো বন্ধুত্বে কখনো ফাটল ধরতে পারে না । স্কুল জীবন হচ্ছে মানুষের শ্রেস্ট জীবন । সবাই ঐ সময়ের বন্ধুদের মিস করে । প্রকৃত বন্ধুত্বে সেক্রিফাইজ থাকতে হয় । বন্ধু মানে অবিরাম এগিয়ে চলা একসাথে । একজন ভালো বন্ধু একজন ভালো গাইড । চলার পথে কোন ভুল বোঝাবুঝি হলে ও তা ছাড় দিতে হয় ।বিপদে বন্ধুর পরিচয় মিলে । কেউ কারো জন্য কিছু করতে না পারলে ও একজন ভালো বন্ধু হয়ে থাকা যায় । সম্পর্ক টাকে লালন করা লাগে ।
“ আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে “।
আজকাল ডিজিটাল যুগে বন্ধুকে খুঁজে পাওয়া খুবই সহজ কাজ । দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্হানে ছড়িয়ে পড়া বন্ধুকে
প্রযুক্তির মাধ্যমে একই সুতোয় বাঁধা যায় । ফলে গড়ে বন্ধু পেইজ । পরিনত বয়সে এেসে ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়বে স্বাভাবিক । বন্ধু থাকলে মনের ভাব আদান প্রদান করা যায় সহজে । যা অনেক সময় আপন জনের সাথে ও শেয়ার করা যায় না । বিদেশে মানসিক সমস্যা গ্রস্থদের ডাক্তার কাউন্সিলিং য়ের ব্যবস্হা করা হয় ।
ভালো বন্ধু কখনো বন্ধুকে আঘাত করা বা ছোট করে দেখে না । ত্রিশ / চল্লিশ বছর পরে হলে ও দেখা হলে চিনতে ভুল হয় না । বন্ধু বিহীন জীবন মাঝি হীন নৌকার মত ।
“ জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণা ধারায় এসো “
প্রিয় বন্ধু চিরদিনের। হতে পারে দু’জনে আলাদা কলেজ গিয়েছেন, আলাদা শহরে জীবন-যাপন করেন, প্রাত্যহিক জীবনের নানা কর্মকান্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, কিন্তু এত কিছুর পরও ভালো বন্ধুত্ব কখনোই হারিয়ে যায় না। দুজন ভালো বন্ধু কখনোই একে অপরকে ভুলে যাবে না, বরং আরো বেশি করে একে অপরকে মনে করবে এবং সময় পেলেই একে অপরের সঙ্গে দেখা করে খুনসুটি করবে, এমনই হতে হবে বন্ধুত্ব। রাগ অভিমান করে পরস্পরকে ভুলে গেলে সেটা কখনোই প্রকৃত বন্ধুত্ব নয়। যেকোনো উপায়ে একে অপরের সাথে যুক্ত থাকা এবং মনের ভাব আদান-প্রদান করার চেষ্টার মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বকে জিইয়ে রাখতে হয়।আর স্কুল জীবনের বন্ধু হলে তো কথাই নেই , চোখ বন্ধ করে সাপোর্ট দিবে ।
When we honestly ask ourselves which person in our lives mean the most to us, we often find that it is those who, instead of giving advice, solutions, or cures, have chosen rather to share our pain and touch our wounds with a warm and tender hand. The friend who can be silent with us in a moment of despair or confusion, who can stay with us in an hour of grief and bereavement, who can tolerate not knowing, not curing, not healing and face with us the reality of our powerlessness, that is a friend who cares.
“পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায় “।
কথায় আছে বিশ্বাস ভালোবাসার শক্তি। আর বন্ধুত্বে বিশ্বাস রক্ষা করা খুবই জরুরি। তৃতীয় কোনো পক্ষের কথার সূত্র ধরে বন্ধুত্বের বিশ্বাসভঙ্গ কখনোই কাম্য নয়। প্রকৃত বন্ধুকে এ বিষয়টি সবসময় মাথায় রাখতে হয়, তবেই তো প্রকৃত বন্ধুত্ব হয়।এমন সুন্দর বন্ধুত্ব কে প্রশ্ন বোধক করা টিক নয় । ভালো বন্ধু সবসময় বন্ধুর ভালো চায়। নিজের ভালো হোক সকলেই চায়, তবে তার জন্য বন্ধুর ক্ষতি হোক এমন ভাবা কিন্তু প্রকৃত বন্ধুর পরিচায়ক নয়। প্রকৃত বন্ধু চাইবেন তার নিজের উন্নতির পাশাপাশি আপনারও উন্নতি হোক। যেখানে কিংবা যত দূরেই থাকুন না কেন, বন্ধুর কল্যাণ কামনাই প্রিয় বন্ধুর পরিচায়ক।
সব শেষে বলব বন্ধুত্ব কে টিকিয়ে রাখার জন্য দু পক্ষ কে চেস্টা করতে হয় । ছোট্ট বেলার বন্ধুত্ব কখোনো হারিয়ে যায় না । চোখের আড়াল হলে ও মনের আড়াল নয় । বন্ধুত্বে কোন বয়স বা লিংগ বিচার করা হয় না ।
বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও । বন্ধুত্ব হোক গৌরবের , আনন্দের আর সম্মানের ।
_______________
No comments