Header Ads

নিস্তব্ধ নিশুতিনী ❑ সাবরিনা মোয়াজ্জেম ❑ পর্ব_০৭

 


নিস্তব্ধ নিশুতিনী

সাবরিনা মোয়াজ্জেম

পর্ব_

কোনো জুট ঝামেলা ছাড়ায় ই সাথীর ভালো বিয়ে জুটে যায়। অতি সুন্দরী হওয়ায় ছেলের পরিবার খুব শীগ্রই বিয়ের আয়োজন করতে বলে। একদিন বিয়ের দিন তারিখও ঠিক হয়ে যায়। সাথী মনের কথা আর রুবার কথা সাথী মনেই চেপে রাখে। আর কি করে স্বামীর সাথে সুখে সংসার করতে হয় সাথী তা সবার চোখে না হলেও পাভেলকে বুঝিয়ে দেবে। আসলে পাভেলকে কি বোঝাতে যাবে? পাভেল তো তার মনের কথাই জানেনা। দু চারবার ইংগিত দেয়া হয়নি তা নয়, সাথী তা দিয়েছে কিন্তু পাভেল রুবার প্রেমে এতো ই অন্ধ ছিলো বোঝার মতো ক্ষমতা হয়নি বা বোঝেও না বোঝার ভান করেছে। যায় ই হোক সুখে সংসার করে সাথী বোঝাবে তার ভালোবাসা পাভেলের প্রতি প্রগাঢ় ছিলো,তা আজ আর নেই। বিয়ের দিন যতো ই এগিয়ে আসে, প্রতি রাতে ই সাথী কাঁদে। কেঁদে কেঁদে অস্থির হয়ে পাভেলের ঘরে গিয়ে পাভেলকে বুঝাতে চায় রুবা নয়, আমি ই তোমার ভালোবাসা! কিন্তু অজানা আশংকায় যেতে পারেনা। পাভেল ফিরিয়ে দিলে এই অভেদ্য অবহেলা কি করে সাথী সহ্য করবে! কতো রাত চেষ্টা করেছে, পাভেলের দরজায় গিয়ে আবার ফিরে এসেছে। পাভেল টেরও পায়নি!

বিয়ের দিন এগিয়ে এলো। আগামী দিন তার গায়ে হলুদ। পাভেল ছুটি নিয়ে আসে দুদিন আগেই! বিয়ে মানেই অনেক ঝামেলা। তাই সাথীর পরিবারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাথীর বিয়ের এরেন্জমেন্ট করে। এদিকে সাথী কাঁদে পাভেলের কর্ম যজ্ঞ দেখে। তখন এমনি আষাঢ় শ্রাবণ মাস। এই আকাশে মেঘ এই আবার ধবধবে ফর্সা। গায়ে হলুদের আগের দিন সারারাত বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টি ভেজা রাতে কখন যে পাভেলের ঘরে রুবা ঢোকে কেউ জানেনা। চরম আবেগে দুজন দুজনাকে জড়িয়ে রাখে। সারারাত চলে প্রেমের আলাপন। আর কবে তাদের সবার সামনে বাসর হবে এই কথা গুলো বলেই যেনো শেষ করতে পারেনা। এই ঘন ঘোর বরষণে তাদের মিলন কেউ ঠেকাতে পারেনা। ভোরে নিশ্চুপ পায়ে চলে আসে। সাথী সব দেখে। কিছুই বলেনা। শুধু চোখের পানি ফেলে নিরবে।

সাথীরা চার তলার দুতলায় থাকে। পুরাণো বিল্ডিং। তার চারিপাশে নতুন কন্ট্রাকশনের কাজ চলছে। শ্রাবণ মাস বলে সাথীর গায়ে হলুদের আয়োজন চার তলার ছাদে হয়। আগের দিনে এতো ধুমধামে গায়ে হলুদ না হলেও বাংলার রীতি রেওয়াজের সাথে একটু আধুনিকতার ছোঁয়ায় গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করে। রুবার বান্ধবী সাথীর বান্ধবীরা ছাড়াও উঠতি বয়সের আসে পাশের মেয়েরা আসে। সবাই হলুদ একজন আরেক জনকে মাখিয়ে দিচ্ছে জটলা হয়ে। কেউ মুখে নিচ্ছে কেউ ছাদেই দৌড়ে এড়িয়ে চলছে। রুবাকে ওর বান্ধবীরা গায়ে হলুদ দিতে এলে রুবা পেছাতে পেছাতে ছাদের কার্নিশের কাছে চলে যায়, পুরনো বিল্ডিেংর শ্যাওলা জমে বড্ড পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া স্থানে পা পরতেই বান্ধবীরা ওকে ধরতে যায় লম্বা হওয়াতে রুবা চার তলার ছাদ মানে পাঁচ তলা থেকে সোজা নিচের সদ্য পাতা রডের উপর পরে যায়! সাথে সাথে রড বুকে ডুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে আসে। যখন রুবাকে হাসপাতালে নেয়া হয় তখন রুবা জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে!

 

চলবে........


https://www.ssbd24.com/2021/06/.html

No comments

Powered by Blogger.