Header Ads

এক সপ্তাহের জমিদার

এক সপ্তাহের জমিদার
মাস শেষে বেতন আসলে সপ্তাহ খানেক ভাবটা জমিদারের মতন থাকলেও, সপ্তাহ খানিন পর পকেটে খুচরা পয়সা ছাড়া আর কিছু থাকেনা। আবারও স্বপ্ন দেখি সামনের মাসে বেতন এলে এইটা কিনবো, সেইটা কিনবো কিন্তু বেতন আসার পর আর অত কিছু কেনা হয়না।
সেই যে আসার পর থেকে শুধু ঋনের টাকায় দিয়ে যাচ্ছি, ঋনটা এখনো সুদ হলোনা। প্রবাসীদের ঋনটা কেনো সহজে সুদ হয়না, কারন প্রবাসে ঢোকার পরেই প্রবাসীরা নিজেকে জমিদার, জমিদার ভাবতে শুরু করে, যদিও রাজ্য বলতে কিছু থাকেনা। যতদিন বেতন আসবে, ততদিন খেয়ে, না খেয়ে দিয়ে যাবে, সঞ্চয় আর ভবিশ্যতের চিন্তা কল্পনাতেও হয়তো করেনা কোনদিন।
কোন মাসে কত টাকা বেতন আসবে, হিসেব করা হয়ে যায় মাস ফুরানোর সপ্তাহ খানিক আগেই। বেতন আসার পর সব খরচ মিটিয়ে ২০/৫০ ডলারের বেশি থাকেনা মানিব্যাগে, কি করে হবে সঞ্চয়?
কত ইচ্ছে এখানে ঘুরতে যাবো, সেখানে ঘুরতে যাবো কিন্তু মানিব্যাগের দিকে তাকালে ইচ্ছে গুলো এমনিতেই মিটে যায়। যাওয়া হয়না আর স্বপ্নের সিঙ্গাপুরের রঙ্গিন ঝলকানি দেখতে।
তবুও এই রাজ্যে'হীন রাজা'রা পরিবারকে সর্বদা বুঝাতে ব্যস্ত, আমি খুব ভাল আছি। বছরে একবার ভাল পোশাক আর ঝমকালো কোন স্থানে তোলা সেলফি'গুলোই গুড়িয়ে ফিরিয়ে দেখায় পরিবার আর বন্ধুদের।
রোদের প্রখরতায় ঘামে ভেজা ঝপঝপে শরিরটা কখনো হয়না ক্যামেরা বন্ধি, পৌছায়না পরিবার অবধি।
তবে দেশ আর পরিবারকে ভাল রাখতে তাদের চেয়ে বড় ভূমিকা আর কেউ রাখেনা। নিঃস্বার্থ, নির্ভেজাল ভাবে একমাত্র প্রবাসীরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশটাকে। দুই পয়সার দুর্নিতীর লিষ্টেও ভুল করে প্রবাসীদের নামটা খুঁজে পাবেননা।
গায়ে গতরে খেটে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, শরিরের রক্ত পানি করে, প্রবাসীরাই একমাত্র সর্বোচ্চ সত ও হালাল উপার্জনকারী।
যারা দুঃখের সাগর সেচে, সুখের মুক্তা আহরণ করে দেশ ও পরিবারে তরে, সদা সর্বদা।
সুমন সিকদার।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী।

No comments

Powered by Blogger.