রকমারি প্রেম _ শাহ সাবরিনা মোয়াজ্জেম
নেভি ব্লু জিন্স আর মেয়েলি পাঞ্জাবি পড়া আমি। নাহ কোন উত্তরীয় পরিনি! বয় কাট চুল! এতো বড় মেয়ে থার্ড ইয়ারে পরে তার চুল ব্য় কাট তাও এই মফস্বলে! অবাক বিস্মিত সাবেক ভিপি তন্ময় চৌধুরী। বিয়ের আসরে বরের বন্ধু সেজে বসা। আমায় হাত ইশারায় ডাকলো! হ্যালো ম্যাম! ওয়াও এই মফস্বলে এতো স্মার্ট ছেলে আছে নাকি! যদিও বয়স একটু বেশী আমার তুলনায়! তবুও কাছে গেলাম।
কি ডাকবো আংকেল না ভাইয়া! বললাম কিছু বলবেন কি! এক দফা ইন্টারভিউ নেয়া হলো! তেমন বুঝিনি! বলছে খাবারের সময় এক সাথে যেনো বসি! বিয়ে শেষ, বউয়ের সাথে আমাকে যেতে ই হবে! আমি যতো না করি মুরব্বিরা আমায় গছিয়ে দিলো।
চারদিন ছিলাম তন্ময় চারদিন খালাদের বাড়ি এসেছে। লম্বা ছেলে, দেখতে শুনতে ভালো খুব পছন্দ হলো আমার। অনেক কিন্তুর মাঝে হারিয়ে গেলাম! তন্ময়ের ভালোবাসা ফেলা সাধ্যকার, কোন নারীর !
অনেক ঘুরেছি, হাতে হাত রেখেছি! ফেলে গেলো কোন কারণ ছাড়ায়! তারপর অনেক দিন পর কারণ জানতে পারলাম মেয়ে হিসেবে আমি খুব ছোট তার জন্যে! আমি যথারীতি ভুলে গেলাম। আগে এসব কিছু আমার মাথায় ঢুকতোনা। পাত্তাও দিতাম না।
আসো ওয়েলকাম যাও তো গুড বাই!
আরেক তন্ময় আমার জীবনে এসেছে সে চৌধুরী নয় ভিপিও নয় সে নাকি হারামী। বলি, খেরেম খানাও যাও? বলে, নাহ! মদ খাও? বলে হা খায়! আমাকে দিবে! হা দেবো যদি তুমি আসো! বলি ঠিকানা দাও সে দিলো, বার্লিন। বার্লিনে যাওয়া পসিবল নয়! হা, সে দেশে এসে কোন একদিন আমায় খাওয়াবে! বলি, ধন্য আমি! কথা বলে বুঝলাম, বেশ জীবন দর্শন তার।
তন্ময়ের সাথে সাদাতের মিল খুঁজে পাই! হা সাদাত এসেছিলো জীবনে। আবার ছেড়েও গেলো। হাতে হাত রাখা হয়নি। চোখে চোখে কথা হয়নি! কেনো ছেড়ে গেলো! উত্তর পেলাম অনেক মাস পর!একদিন ব্লক করেছিলো! একদিন ফোন করেছিলো! কে? আমি সাদাত। আবার কেনো, জানিনা। ছেড়ে গেলে কেনো! অতি প্রেমের জন্যে। ওর নাকি খুব কষ্ট হচ্ছিলো তাই! প্রেমের জোয়ারে তরি বেয়ে এসে আবার চলেও যাওয়া ইচ্ছে মতে এটা রাম সাম যদু মধুর খেলা ! ওর লেখার ভক্ত ছিলাম আমি। অনেকের লেখা পড়ি কিন্তু ও অন্য রকম লিখে! বিসিএস অফিসার! সে নাকি মনে মনে পাগল হয়ে যাচ্ছিলো! গেছো, সুখে আছে তো! ওপারের কণ্ঠস্বর অস্বচ্ছ!
আজ সখিনার সাথে, ব্রীজে দাঁড়িয়ে অনেক ক্ষন কথা হলো! সখিনাকে বলি, প্রেম করেছিস কখনো? সখিনা বলে, ছোট বেলায় বিয়ে হয়েছে তাই সময় পাইনি! তাই বিয়ের বাইশ বছরে প্রেমের খেলা অনেক সাংগ করেছে! কেমন লাগেরে, বিয়ের পরের প্রেম। ও বলে, আপা বড় কষ্ট পেতাম প্রথম প্রথম। এখন মাঝে মাঝে মাথায় গোবর মেখে দেয়, মাথা গরম হলে! ছ্যাকা খেলে মাথায় গোবরের প্রলেপ দিবেন। খুব ভালো বুদ্ধি দিয়েছিস! কবিতা লিখিস। হা লিখি, আবৃত্তি করে দু চার লাইন কবিতা শুনালো, "
কাঁচের দেয়ালের মতো
ভেঙ্গে যায় আয়ুর গোঁলক
রেশমী জরির রাংতা পরা ঝলক
পলক ফেলে যায় দুষ্ট পুরুষ
বার বার বনসাই প্রেমের
গায়ে বসায় বনসাই চুমুর প্রলেপ
তবুও কাছাকাছি যতটা কাছে
ঠিক ততোটা দুরে দুই ঊরুসন্ধির মিলন!!!
শাহ সাবরিনা মোয়াজ্জেম
No comments