বিবর্ণ বিকেল _ মোসাঃ জান্নাতুল মাওয়া
তখন ছিল চৈত্র মাস।ধুলোর কুন্ডলি পাকিয়ে ধুলির ঝড় বইছে। রুশি গনিত প্রাইভেট পড়ছিল,বৃষ্টিহীন চৈতালী ঝড়ো হাওয়ায় হঠাৎ চোখে চোখ। নবম শেনির ছাত্রী রুশির বুঝতে বাঁকি রইল না চোখের ভাষা।লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নিল। তারপর রোজ রুশিকে ফলো করা নাম না জানা সেই যুবকটি ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকত।বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। একটা রঙ্গিন নীল খাম রুশির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল," বইয়ের পাতায় লুকিয়ে রাখো বাসায় গিয়ে দেখো।"পুরো শরীর কাঁপছে রুশির, সাথে হার্টবিটটা ও বেড়েছে বেশ, প্রাইভেটে মন নেই, তাও আবার গণিত! কোন রকমে প্রাইভেট শেষ করে বাসায় গিয়ে মুড়ানো খামটি আস্তে, আস্তে খুলছে আর গাঁ ঘেমে পরছে বৈশাখী কোন অজানা ঝড়ে।
দেখল তাজা লাল গোলাপ সাথে নববর্ষের ভিউকার্ড, যুবকের নাম লিখা ছিল তাতে। বাঁকিটা না বলাই থাক।কিশোরী মেয়েটি সহজ সরল ছিল। ধীরে, ধীরে রোশানের প্রেমে নিজেকে জরিয়ে ফেলল।রোশান দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গনিতের ছাত্র ছিল।নিয়মিত চিঠিপত্র আদান প্রদান চলত তাদের।একসময় রোশান পড়ালেখা শেষ করে প্রথম শ্রেণির সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করল। রুশি বি. এস. সি পাশ করে সরকারী চাকুরি পেয়ে গেল একটা। রোশান চাকুরী পাবার পর রুশির কোন খবরই রাখত না। চিঠির উত্তরটা পাবার আশায় রুশির কত নির্ঘুম রাত কেটেছে হিসেব নেই তার।রুশিও একটা সরকারি চাকুরি পেয়ে গেল।চাকুরিতে যোগদানের পর বুকভরা আশা নিয়ে খুঁজে বের করা রোশানের ঠিকানায় চলে গেল রুশি কোন এক কাংখিত অধিকার নিয়ে। কিন্তু রোশান ততদিনে নিজেকে বদলে ফেলেছে। সকালটা গড়িয়ে কখন যে রংহারা বিকেলটাও অস্তাচলে যাচ্ছিল রুশির সেদিকে কোন খেয়ালই ছিল না। ছল, ছল চোখে, চাপানো বুকফাটা কান্নায় ফিরে এল রিক্ত হয়ে......।রুশি নিজেকে সামলিয়ে উপযুক্ত স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছে কিন্তু রোশান!রোশান তার স্ত্রীকে নিয়ে কী সত্যিই সুখী হতে পেরেছে? হায় বিধাতা! ক্ষমা করো তাকে..............।
(সম্পূর্ন কাল্পনিক)
____________________
মোসাঃ জান্নাতুল মাওয়া
No comments