Header Ads

পিঁপড়ে বিদ্যা



পিঁপড়ে বিদ্যা
____________

আমি আর ভুত্নাভাই এতো কাছের বন্ধু তাই কখনো মনে ই হয়নি ভুত্না ভাই পুরুষ মানুষ। তার সাথে ই সঙ্গ দিতে আমার ভীষণ ভালোলাগে।আমি গরীব ছা-পোষা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ তাই ভুত্নাভাই নিজ দায়িত্বে তার সাথে কাটানো সময়টা শেষ করে আসার সময় কিছু সম্মানী ধরিয়ে দেন।

সিনেমা হলে পিঁপড়া বিদ্যা দেখতে যাবো। ভুত্নাভাই উল্লাসে ফেটে পড়েছেন। কারণ ছবির নায়িকা তার দারুণ পছন্দের। ভুত্নাভাই ভীষণ মোটা আর নায়িকা স্লিম মানে একটু বেশি স্লিম! চাঁটগার ভাষায় তিনি আমাকে অনেক কিছু বুঝাতে চাইছেন কিন্তু তার কথার আগা মাথা না বুঝেই আমি হু হা করছি।
সাদা শার্ট, সাদা প্যন্ট, সাদা জুতো, লাল টাই আর লাল টুকটুকে ঠোঁটের পান খাওয়া মুখ। মাথা চকচকে টাক। কেমন একটু নাচার ভঙ্গিতে চেয়ার ঘুরিয়ে, একটু মওকা মওকা গানের সাথে ডেন্স করে আমায় বলছে, কেমন লাগছে সাবু! বেশী আহ্লাদ হলে আমাকে সাবু বলে ডাকে! আমি বলি, ভুত্নাভাই একেবারে ঝাক্কাস মওকা। মনের অজান্তে ই ভুত্নাভাই তার বিশাল ভুড়িটা হাতাচ্ছেন। ভুড়িটা আজ কেমন যেনো টোবলা মেরে আছে। আর প্যান্ট পড়ে সুন্নতি। গোড়ালির হাড়ের উপর। আজ ড্রাইভার সাথে নিলো। আর সারা রাস্তা মুদ্রা দোষে ভুড়ি ই হাতাচ্ছেন।
যাক চলে গেলাম সিনেমা হলে। গিয়ে আমি সিট টা ধরে বসলাম। ভুত্নাভাইয়ের মান্দাতা আমলের সিটের কথা মনে নেই। অন্ধকারে তিনি যেইনা মওকা,মওকা বলে বসেছেন একেবারে ভুড়ি নিয়ে ধপাস! এখন কি করি! সিনেমা চলছে এখন পা দুটো উল্টে হয়ে আছে। কি করে এই ভুড়ি টেনে বের করি। অন্ধকারে হাতড়াতে গিয়ে তার চোখে আগুল দিয়ে এমন গুতো মেরেছি হাতের বড় বড় নখ দিয়ে। এদিকে ভুত্নাভাই আঁতকে চিৎকার করে উঠলেন হাতে ছিলো স্প্রাইট তা দিলাম পানি মনে করে তার চোখে। ভয়াবহ আত্ম চিৎকারে সিনেমা হলের পরিবেশ ভারি হয়ে গেলো! তাড়াতাড়ি ম্যানেজার ও কয়েকজন কর্মচারি দৌড়ে এলো, স্পেস টা এতো কম যে, চেয়ার ভাংগা ছাড়া তাকে উঠানো সম্ভব নয়! এক কর্মচারী একটা কাটার এনে এক পাশ কেটে তাকে বের করা হলো।
তার রীতিমতো শ্বাস কষ্ট শুরু হয়ে গেছে। কান্না করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছেন। কোন রকমে গাড়ি চালিয়ে তার বাসায় পৌঁছে দিলাম। কান ধরেছি আর ভুত্নাভাইকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবোনা!
_________________________
শাহ সাবরিনা মোয়াজ্জেম

No comments

Powered by Blogger.