Header Ads

অবন্তিকা ❑ উপন্যাস ❑ কিশোর পণ্ডিত ❑ পর্ব ০২

 


উপন্যাস

ন্তিকা

কিশোর পণ্ডিত

পর্ব_০২

বিকাল বেলায় পার্থ তার থাকার রুমে একাকি বসে বসে কি যেন ভাবছিল। তার থাকার রুমে বড়লােকী বিলাস বহুল সব ফার্নিচার পার্থ যেন সেগুলি ব্যবহার করতে সাহস পায় না তাই সে রুমের এক কোণায় থাকা কাঠের চেয়ারটিতে বসে দক্ষিণা খােলা জানালায় বসেছিল হঠাৎ সে যেন ঘরে কারাে পায়ের শব্দ শুনতে পেল সে ঠিকই শুনেছে যখন পিছন ফিরে তাকাল দেখতে পেল অবন্তিকাকে পার্থ যেন বােবা হয়ে গেল সে কিছু বলার সাহস পেল না অবন্তিই পার্থকে বলল কি ভাবছেন একাকি বসে ? পার্থ তখনাে কিছু বলার সাহস পেল না শুধু তার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে দেখল অবন্তি আবারও জিজ্ঞাসা করল এই যে , মশাই কথা বলছেন না যে , এবার পার্থ কথা বলল সে বলল কিছু ভাবছি না , দক্ষিণের জানালা দিয়ে অবন্তি বাইরের দিকে তাকাল সে দেখল দোতলার ঘরের জানালা দিয়ে লেকের দৃশ্য ভালই দেখা যাচ্ছে অবন্তি ধানমন্ডি লেকের দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে পার্থকে বলল যাবেন নাকি এই বিকেলে ওখানে বেড়াতে পার্থ রাজি হয়ে গেল অবন্তিকাকে সাথে নিয়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে নেমে এল এবং পায়ে হেঁটে তাকে নিয়ে ধানমন্ডি লেকের দিকে চলল লেকের ধারেই তারা দুজনে সেদিন সারাটা বিকাল কাটাল এই প্রথম পার্থ ঢাকার শহরে নির্ভয়ে কিছু সময় কাটাল বিকালে শুধু অবন্তিই নানা রকম কথা বলেছে , নানা রকম প্রশ্ন করেছে পার্থ শুধু হ্যাঁ এবং না এই শব্দ দুটিই ব্যবহার করেছে দিনের বিকালে অবন্তির সাথে কথা বলে পার্থের কিছু জড়তা ভাঙ্গতে শুরু করল সন্ধ্যার দিকে ফেরার পথে পার্থ হ্যাঁ আর না ত্যাগ করে একটা পুরো বাক্যে কথা বলল রাতে খাবার টেবিলে মিঃ চৌধুরী এবং অবন্তিকা বসেছিল পার্থকে না দেখে মিঃ চৌধুরী তাদের বাড়ীর কাজের ছেলে কার্ত্তিককে পার্থকে ডাকতে বললেন কার্ত্তিকের সাথে পার্থ ডাইনিংরুমে ঢুকল মিঃ চৌধুরী পার্থকে এক দৃষ্টিতে কিছু সময় আপাদমস্তক দেখে নিলেন তিনি দেখলেন তার পড়নে অনেক দিনের পুরনাে প্যান্ট - শার্ট আর পায়ে সেলাই করা চামড়ার স্যান্ডেল মিঃ চৌধুরী পার্থকে ডাকলেন , এসাে বাবা , বসাে সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম , তােমার সাথে কোন আলাপই হল না দেখ দেখি কান্ড তুমি বাড়ীতে একাকি আর আমি তােমাকে কোন সময়ই দিলাম না ।পার্থ তার কথা শেষ হতে না হতেই অবন্তিকে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল একা কোথায় উনার সাথেতাে সারাটা বিকাল বেড়ালাম মিঃ চৌধুরী খুব সন্তুষ্ট হয়ে বললেন তাই নাকি ? সাবাস মা ! অবন্তিকে ধন্যবাদ দিয়ে মিঃ রায় বললেন ,আমার বুদ্ধি বিবেক না থাকলে কি হবে , আমার মায়ের ঠিকই আছে পার্থ ডাইনিং টেবিলের যে চেয়ারটাতে বসল তা মিঃ চৌধুরীর বাম পাশেই যেন অবন্তির ঠিক মুখােমুখি খাবার ফাঁকে ফাঁকে অনেক কথা হল পার্থ অবন্তিকার মুখের দিকে কয়েকবার তাকাল অবন্তিকাও তার দিকে কয়েকবার তাকিয়েছিলাে মিঃ চৌধুরী বললেন , শুন পার্থ তুমি যে পরিচিতির কথা বলেছিলে আমি কিন্তু তােমার অপরিচিত নই আমি তােমাকে চিনি পার্থ কিছুটা চমকে উঠল সাথে সাথে বলল চেনেন কিভাবে ? মিঃ চৌধুরী বললেন সেসব আমি অবন্তিকাকে বলেছি তুমি ওর মুখ থেকে পরে জেনে নিও তার আগে বল , তােমার মা কেমন আছে পার্থ বলল , মা বেঁচে আছে মাত্র ,শরীর মন কোনটাই ভাল নেই মিঃ চৌধুরী দেখলেন মায়ের কথা জানতে চাওয়ায় পার্থর মুখটা মলিন হয়ে গেল তাকে বড় চিন্তিত মনে হল সে আরাে বলতে লাগলাে আমার দাদু , দাদু বলতেই মিঃ চৌধুরী বললেন তােমার দাদু খােকারাম তােমার বাপকে ত্যাজ্য করেছিল তাইতাে পার্থ বলল হ্যাঁ তার পর পার্থ বলল যুদ্ধের পাঁচ বছর পরে মা আমার এক মামার বাড়ীতে আমাকে নিয়ে উঠেছিলেন আমার মামা প্রসাদপুরে শ্বশুরবাড়ীতে ঘরজামাই ছিলেন আমার ছােট মামা ছাড়া আর কারাে তেমন অবস্থা ছিল না যে আমার মা আমাকে নিয়ে আর কারাে বাড়ী আশ্রয় নেয় ছােট মামা আমাদের খুব আদর যত্ন করতেন কিন্তু মামী তেমন ভাল চোখে আমাদের দেখতেন না তাই মামার বাড়ীতে পাঁচ বছর থাকার পর আবার বিহারপুরে চলে আসি তখন আমার দাদু খােকারাম মৃত্যুর আগে তার দম্ভ ভেঙ্গে সকল রাগ বিসর্জন দিয়েছিলেন তখন তার একমাত্র নাতি পার্থকে তার শেষ ২০ শতাংশ জমি উইল করে দিয়ে যান আমরা তিনজন মা আমি আর ঠাকুরমা সেই জমিতে থাকি তার বছর পাঁচেক পরে ঠাকুরমা মারা যান এখন শুধু মা' আছেন বিহারপুরে মিঃ চৌধুরী এবং অবন্তিকা খাওয়ার টেবিলে পার্থের কথাগুলাে খুব মনােযােগ সহকারে শুনল অবন্তিকা দেখল তখনকার খাওয়া পার্থর খুব একটা ভাল হলাে না তাই অবন্তিকা বলল , থাক বাবা ওনার সব কথা পড়ে শোনা যাবে নি এখন থাক পার্থ খাওয়া শেষ করে খাওয়ার ঘর থেকে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সরাসরি শােবার ঘরে চলে গেল মিঃ চৌধুরী এবং অবন্তিকা তাদের নিজ নিজ শোবার রুমে চলে গেল সে রাতে সে কষ্টে গভীর রাতে খানিক্ষণ ঘুমিয়েছিল মাত্র পরদিন সকালে মিঃ চৌধুরী তার কাজে যাওয়ার আগে অবন্তিকাকে তার কাছে ডাকলেন এবং পার্থের জন্য কিছু নতুন কাপড় চোপড় কিনার জন্য কিছু টাকা দিয়ে নিজের কাজে নিজের গাড়ী নিয়ে চলে গেলেন দিন বিকালে অবন্তিকা পার্থকে নিয়ে তাদের অন্য গাড়িতে চেপে নিউমার্কেটে গেলাে মার্কেটে গিয়ে অবন্তি তার পছন্দ মতন কিছু অভিজাত পােশাক নিজের জন্য কিনল পার্থকে কিনে দিল ট্রায়ালরুম থেকে যখন পার্থ সাদা রং কালো চেকের ফুলশার্ট এবং কালাে প্যান্ট পড়ে বের হলাে তখন অবন্তি যেন তাকে চিনতেই পারলাে না সে যে পার্থকে তার সাথে নিয়ে এসেছিল সেই পার্থই অত হ্যান্ডসাম অবন্তির যেন মােটেই বিশ্বাস হচ্ছে না সে বার বার পার্থকে চেয়ে দেখলাে পােশাকেই অবন্তি তাকে গাড়ীতে উঠিয়ে নিয়ে বাড়িতে চলে এলো ।সেদিন পার্থের মার্কেট ছাড়া আর অন্য কোথাও বেড়ানাে হল না তাই সে রাতের খাবার শেষ করে ছাদে বেড়াতে গেলাে দুদিন আগে পুর্ণিমা চলে গেছে তাই আকাশে চাঁদ উঠতে কিছুটা দেরী হল যখন পার্থ ছাদে গেলাে তখন রাত নটা হবে তখন আকাশে চাঁদ উঠেছে তাই অমন জ্যোৎস্না রাতে ছাদে বেড়াতে পার্থর ভালই লাগছিল কিন্তু কেন জানি তার বড় একাকি লাগছিল সাথে কাউকে পাবার বাসনা যেন কিন্তু রাতে সেদিন কেউ আসেনি পার্থকে একটু সঙ্গ দিতে অবন্তিকাও আসেনি সেদিন রাতে অবন্তিকা তার নিজের রুমে খুব করে সেজেছিল কপালে লাল টিপ আর আজকের নিউমার্কেট থেকে আনা পােশাকগুলাে পড়েছিল সে উজ্জ্বল গােলাপী থ্রী পিচ আর সুন্দর লাল উড়নায় অবন্তিকাকে বেশ লাগছিল সে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় কিছুক্ষণ সেজেগুজে নিজেকে দেখে নিলাে আবার কিছুক্ষণ পরে সব খুলে সকাল সকালে শুয়ে পড়ল শােবার আগে অবন্তি একবার পার্থের রুমের ধারে গিয়েছিলাে দরজা খােলা , রুমে উঁকি দিয়ে দেখলাে পার্থ ঘরে নেই কোথায় গেল সে অবন্তি চিন্তা করতে করতে তার ঘরের দিকে যাচ্ছিল কার্ত্তিকের নিকট জিজ্ঞাসা করল উনি কোথায় ? পরে কার্ত্তিক পার্থের ছাদে উপস্থিতির কথা জানাল কিন্তু অবন্তি ছাদে যায়নি পার্থর ছাদে একাকি খুব একটা ভাল লাগলাে না , শুধু তার বিহারপুরের কথা মনে পড়ল এমন জ্যোৎস্না রাতে সে পাড়ার বাসুদেবকে সঙ্গে নিয়ে বড় রাস্তার ধারে কত না বাঁশি বাজিয়েছে তখন তার কত ভালাে লাগতাে কিন্তু মাত্র একটু ছাদে ঘোরাফিরা তার ভাল লাগলাে না বাঁশি বাজাবার সাহস হলাে না শেষে বিহারপুরের কথা ভাবতে ভাবতে তার মায়ের কথা মনে পড়ে গেলাে মা কি করছে তার কথা ভাবছে কিনা ইত্যাদি ভাবতে ভাবতে পার্থ নিজের রুমে চলে আসলাে এবং তখনি বিছানায় শুয়ে পড়ল সে রাতেও পার্থের ভাল ঘুম হলাে না সকালে অবন্তি দুই কাপ চা নিয়ে পার্থের রুমে হাজির হলো পার্থের কোন সময়ই চা খাওয়ার অভ্যাস ছিল না এখানে এসে চা খাওয়া থেকে শুরু করে অনেক নতুন কিছুই শিখেছে সে অবন্তি এক কাপ পার্থকে দিয়ে অন্য কাপ নিজে পান করতে লাগলাে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে অবন্তি পার্থকে বলল কি মশাই রাতে কোথায় ছিলেন ? পার্থ বলল , গতরাতে ছাদে ছিলাম অবন্তি বলল জানি সেটা , জোছনা রাতে একাকি বসেছিলেন জেনেও জিজ্ঞাসা করলেন বলল পার্থ বাঁশী বাজিয়ে ছিলেন ? না বাজাতে জানেন নাকি ? তা জানি বৈকী সত্যি জানেন ? অবন্তি যেন খুব খুশীর সাথে চঞ্চল হয়ে , বলল পার্থ ধীর কণ্ঠে বলল সত্যিই জানি অবন্তি বলল সাথে বাঁশী আছে বংশীবাদক ? না নেই বলল পার্থ অবন্তি একটু চুপ হয়ে গেল এবং পরে বলল ঠিক আছে পার্কে গিয়ে বাঁশী কিনব , এবং আজই ছাদে জোছনা রাতে বাজাতে হবে পার্থ তার কথায় রাজী হয়ে গেল পার্থ বলল কাল রাতে আমি ছাদে একা জেনে ভয় পেয়েছিলেন ? আসলেন না যে ছাদে অবন্তি বলল ভয় ! আপনাকে ! মােটেও না ইচ্ছে করেই আসিনি আসতে ইচ্ছে হয়নি ইচ্ছে হয়েছিল , বাঁশী বাজননি বলে আসিনি অবন্তি হেসে বলল পার্থও হাসলাে পরে অবন্তি পার্থের রুম থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে লাগল তার পিতা তাকে গাড়ীতে করে নামিয়ে দেবে তার ভার্সিটিতে। তাই সে খুব তাড়াতাড়ি কাপড় বদলিয়ে বাবার সাথে গাড়ীতে গিয়ে উঠল পার্থ তার ঘর থেকে সব দেখল পার্থ এখানে এসেছে কয়েকদিন হলাে একা একা বাইরে যাওয়া হয়নি যে উদ্দেশ্যে সে এসেছিল সেটা তাকে খুব করে একটা নাড়া দিল তাই সে নিজেই একাকি অবন্তী চলে যাওয়ার পর ঘর থেকে বেরিয়ে এল সে চাকুরীর খোঁজে শহরে বেরিয়ে গেল পার্থ রিক্সায় করে পায়ে হেঁটে অনেক অফিসে খোজ নিল কিন্তু সব জায়গা থেকে সে বিফল হল সারাটা শহর শুধু ঘুরেই বেড়াল কোন লাভ হল না তার তাই তার মনটায় যেন চাকুরীর ব্যাপারে বিতৃষ্ণা এসে গেল কিন্তু তা হলে তাে তার চলবে না সে মাকে কথা দিয়ে এসেছে একটা চাকুরী সে জোগাড় করবেই এখন কি করা যায় এই ভেবে পার্থ যেন একেবারে দিশে হারা হয়ে গেল তাই সেদিন তার বাড়ী ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গেল যখন পার্থ বাড়ী ফিরল তখন মিঃ চৌধুরী বারান্দায় বসে পুরনাে খবরের কাগজের উপর একনজর চোখ ভুলাতে ছিলেন সেদিক দিয়ে পার্থকে ঘরে ঢুকতে দেখে মিঃ চৌধুরী পার্থকে ডেকে ফিরালেন এবং বললেন কোথায় গিয়েছিলে পার্থ ? পার্থ বলল সে চাকুরীর উদ্দেশ্যে একটু শহরে বেরিয়েছিল তখন মিঃ চৌধুরী বললেন, আচ্ছা পার্থ তােমার কি এখানে থাকতে কষ্ট হচ্ছে ? না না তা হবে কেন ? আমিতো এখানে মহাসুখে আছি তারপর পার্থ তার মায়ের কথা মিঃ চৌধুরীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলল মা গ্রামে তার আশায় আছে তাই তার কিছু একটা করা দরকার মিঃ চৌধুরী এবার আসল ব্যাপারটা বুঝলেন তিনি ইচ্ছা করলে মাসে মাসে কিছু টাকা পার্থর হাতে দিয়ে বলতে পারতেন তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতে কিন্তু তা করা ঠিক হবে না তিনি তা বুঝলেন পার্থকে তিনি বুঝেছিলেন যে সে টাকা গ্রহণ করবে না তাই তিনি অমন প্রস্তাব পার্থকে না দিয়ে তার চাকুরীর ব্যাপারে কিছু একটা করবেন ভেবে পার্থকে বললেন ,ঠিক আছে পার্থ তােমার আর এব্যপারে চিন্তা করতে হবে না ।তুমি কাল সকালে একবার আমার অফিসে এসো ,বলে তিনি চেয়ার থেকে ওঠে গিয়ে শোবার ঘরে চলে গেলেন পার্থও ধীরে ধীরে তার রুমের দিকে চলে গেল সেদিন মাত্র রাতে খাবার টেবিলে অবন্তির সাথে দেখা হল কিন্তু কোন কথা হলাে না পার্থ শুধু অবন্তির দিকে কয়েকবার ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছিল পার্থের যেন কি হয়েছে ,শুধুই তার অবন্তির সাথে থাকতে মন চায় আর যেন বার বার তাকেই শুধু তার দুচোখ ভরে দেখতে ইচ্ছে করে খাওয়া দাওয়া শেষ করে পার্থ সেদিন আরামে ঘুমিয়ে গেল পরদিন সকালে অবন্তি পার্থ আর মিঃ চৌধুরী একত্রে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল অবন্তিকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে পার্থ আর মিঃ চৌধুরী তার অফিসের দিকে চলে গেল অফিসে গিয়ে চৌধুরী কাকে যেন ফোন করলেন পরে পার্থকে সেখানে যেতে বললেন।পার্থ মিঃ চৌধুরীর এক বন্ধুর সহায়তায় তারই একটা ফার্মে বেসরকারী একটা চাকুরী পেয়ে গেল

চলবে........

No comments

Powered by Blogger.