Header Ads

নারী কেন কাঁদে? _ নূরবানু রীনা

নারী তার সুখ স্বপ্নের কাঙ্ক্ষিত ভরসায়,
স্বামীর লাঞ্ছনা-গঞ্জনায় বারবার হোঁচট খায়।
অভিনয়ে বোঝায় তবু,
সে এক ভাগ্যবতী স্বামী সোহাগিনী বধু।
দূর্লভ প্রেমের প্রাসাদে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়;
কোলাহল মূখর উৎসবে।
অজান্তে আচ্ছন্ন হয়
নিরানন্দ অবসাদে।

অত্যাচারিত বন্দী জীবনে বেঁচে থাকার অবলম্বনে
পায়না নিশ্চিন্ত আশ্রয় নারীত্বের কারণে।
সমাজের সচেতন মানুষেরা রূঢ় ভাষায় বলে,
"হবেনা দেওয়া প্রশ্রয়, প্রশ্রয় দিলে-
নারী মাথায় ওঠে;
মুখে প্রতিবাদের বুলি ফোটে।"

তাই বাংলার ঘরে আজও কাঁদে তারা
রাতের নিঃশব্দ প্রহরে;
কাঁদে তারা গ্রামের জীর্ণ কুটিরে;
শহরের বিশাল বাড়ির জৌলুসে-
সাজানো ঘরে।

কেনো কাঁদে নারী
আজও বাংলার ঘরে?
নারী কি সংগ্রাম করেনি একাত্তরে? 
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে জ্বলেনি কি
শোকের অনলে?

তবু কেন পায়না তারা, যথার্থ মানুষের সম্মান? 
কেন আজও তাদের চোখে 
অশ্রু থাকে বহমান? 
বারবার বুঝিয়েছে নারী, নয় তারা শুধুই ভোগ্য।
নিছক ঘর সাজাবার কোনো দ্রব্য।

ইতিহাসের যত কাহিনী 
তার কোথাওতো বলেনি,
নারী ছিলো শুধু বিলাসিনী। 
প্রয়োজনে তলোয়ার হাতে 
করেছে তারা যুদ্ধ, হয়ে রণরঙ্গিনী;
চালিয়েছে অসীম সাহসে খেয়া তরণী।
নিজ শক্তিতে নিয়েছে তারা, নিজের যোগ্য আসন;
দুলিয়েছে কত রাজ্যের রাজ সিংহাসন। 

তবু আত্মভুলে অনেক পুরুষেরা বলে,
"নারী নিয়ে বড়জোর লেখা যায় প্রেমের কাব্য,
করতে পারেনা তারা কোন সৃষ্টি অনবদ্য।"

চোখে আঙ্গুল দিয়ে তাই বিশ্বের দরবারে
নারী পরেছে সাফল্যের তাজ।
এতে যেনো চলে গেছে পুরুষের জাত।

ভাবে পুরুষেরা, হাতে চুড়ি পড়ে নারীরা
বাজাবে রিনিঝিনি;
অবসরে হয়ে বিনোদিনী।
তাদের অবহেলা অনাদরে 
নিজ প্রতিভায়,
বিদ্রোহী হয়ে ওঠে অন্দরে বৌরানী;
কথা বলে মানুষ নারী
শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসে, হয়ে গরবিনী।
স্বা
স্বামীদের সম্মানে তাতে পড়ে টানাটানি;
রাঙা চোখে দেখায় তাই ভয়ের শাসানী। 
আত্ম অহমিকায় তারা বলে,
"নারীত্বের প্রকাশ কেবল চোখের জলে;
একফোঁটা আঁচে যখন মোম হয়ে গলে"।
হীন চোখে তাকায় তারা নারী যখন,
মশালের শিখা হয়ে জ্বলে।

কেনো মিথ্যে অহমিকার যাতাকলে
পুরুষেরা ইচ্ছেমত নারীদের নিষ্পেষিত করে চলে?
কেনো পোড়ায় অশান্তির দাবানলে?
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ কেনো করে চলে,
বিন্দু বিন্দু চোখের জলে?

No comments

Powered by Blogger.